Description
ঝালকাঠির বহুকালের পুরোনো ঐতিহ্য শীতলপাটি। একটা সময় ছিল যখন গ্রামের বাড়িতে অতিথি এলে সতে দেয়া হতো পাটিতে। গৃহকর্তার বসার জন্যও ছিল বিশেষ ধরনের পাটি। বর্তমানেও হিন্দুদের বিয়ের অন্যতম অনুষঙ্গ শীতলপাটি। গরমকালে শীতলপাটির কদর একটু বেশি। বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠের দুপুরে শীতলপাটি দেহ ও মনে শীতলতা আনে। দেশের যে কয়টি জেলায় শীতলটাটি তৈরি হয় তার মধ্যে ঝালকাঠি জেলা অন্যতম। ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার হাইলাকাঠি, ডহশংকর, সাংগর, জগন্নাথপুর গ্রামের প্রায় ২০০ টি পরিবার শীতলপাটির তৈরি ও পাটি তৈরির প্রধান কাঁচামাল পাইত্র্যা নামক এক প্রকার গুল্ম জাতীয় গাছ চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করে। এছাড়া রাজাপুর সদর, নলছিটির তিমিরকাঠ, কামদেবপুর প্রভৃতি জায়গায় শীতলপাটি তৈরি হয়। এছাড়া ঝালকাঠির কাঁসারিপট্রির কয়েকটা বাড়িতে শীতলপাটি তৈরি হয়। সব মিলিয়ে ঝালকাঠির প্রায় ৩০০ (তিনশত) টি এর বেশি পরিবার শীতলপাটির সাথে প্রত্যÿভাবে জড়িত এবং এর মাধ্যমেই তারা জীবিকা নির্বাহ করে। ঝালকাঠির সবচেয়ে বেশি শীতলপাটি তৈরি হয় হাইলাকাঠি গ্রামে। এ গ্রামের পাটিবররা সবচেয়ে ব্যসত্ম সময় কাটায় গ্রীষ্মকালে। গমরকালের ৩ মাসের আয় দিয়েই তারা প্রায় পুরো বছর চালায়। এই গ্রামে প্রায় ১০০ (একশত) বিঘা/ ৩৫ (পয়ত্রিশ) একর জমিতে শীতলপাটির কাঁচামাল পাইত্র্যা চাষ হয়। এখানে প্রায় ২০০ (দুইশত) জন কৃষক এ পাইত্র্যা চাষাবাদ ও রÿণাবেÿণ করেন। এছাড়া শুক্তাগড় ইউনিয়নের সাংগর ও জগন্নাথপুর গ্রামে আনুমানিক ২০ (বিশ) একর জমিতে পাইত্র্যা জন্মে। এসব গ্রামের ষাট বছরের বৃদ্ধ থেকে শুরম্ন করে দশ-বারো বছরের ছেলে-মেয়েরাও পাটি বুনে। তবে সব পাইত্র্যা চাষিরা এখন আর পাটি বোনে না; অনেকে বিক্রি করে দেয়। পাইত্র্যা অনেকটা এমনি এমনি প্রাকৃতিক নিয়মে জন্মে। শুধু নিয়ম মাফিক পাইত্র্যা কাটা আর নিয়মিত আগাছা পরিস্কার করা। একবার একটি পাইত্র্যার মূল বা কন্দ লাগালে তা দীর্ঘদিন ধরে গোড়া থেকে গজাতে থাকে পাইত্র্যা গাছ। এ জন্য যে জমিতে তারা একবার চাষ শুরম্ন করেছে সে জমিতে আর অন্য কোন চাষের কল্পনা করে না। এ গাছ প্রায় ৭-১০ ফুট লম্বা হয়।
Reviews
There are no reviews yet.